অরিতি অধিকারী ভিকারুননিসা নূন স্কুলের (ভিএনএস) সিদ্ধেশ্বরী শাখর নবম শ্রেণির ছাত্রী। পরীক্ষার হলে মোবাইলসহ ধরা পড়ে। মোবাইল পাওয়ায় তাকে দুই দিন পরীক্ষা দিতে দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরপর সোমবার অরিতি বাবা দিলিপ অধিকারী স্কুলে যান, এসময় প্রিন্সিপাল বাবাকে মেয়ের সামনে অকথ্য ভাষায় নানা বিষয় নিয়ে অপমান করে। সবার সামনে অরিতির বাবা কেঁদে ফেলে। আর এই ঘটনার পরেই অরিতি বাসায় গিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
এই দিকে এ ঘটনায় স্কুলের সামনে বিক্ষোভ করছেন অভিভাবকরা। মঙ্গলবার পরীক্ষাও বর্জন করেছে স্কুলটির শিক্ষার্থীরা। অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে সবসময়েই এ ধরণের বাজে আচরণ করে যাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। অরিত্রির মৃত্যুর ঘটনায় যা সামনে এসেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির কাছে অভিযোগ করার পরও কোনো সমাধান মেলেনি।
এই বিষয়ে অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী বলেন, রোববার পরীক্ষার হলে অরিত্রি মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ায় তাকে ও তার স্ত্রীকে ডেকে পাঠানো হয়। তারা সোমবার গিয়ে মেয়ের হয়ে ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু তিনি ‘কিছু করার নেই’ জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের কাছে যেতে বলেন। এরপর তারা প্রিন্সিপালের কাছে গিয়েও ক্ষমা চান। একপর্যায়ে অরিত্রি তার পা ধরে ক্ষমা চায়। তাতেও কাজ হয়নি। প্রিন্সিপাল তাদের অপমানজনক কথাবার্তা বলে তার কক্ষ থেকে বের করে দেন।
তিনি আরো বলেন, ওই ঘটনার পর অরিত্রি প্রিন্সিপালের রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়। তারাও তার পিছু নেন। স্কুল থেকে বের হয়ে মেয়ে একাই একটি রিকশায় তাদের শান্তিনগরের বাসায় চলে আসে। পরে তারা ফিরে দেখেন, নিজের ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছে অরিত্রির নিথর দেহ। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাবার অপমানে ভিকারুননিসা শিক্ষার্থী অরিতি অধিকারী আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে এই কমিটি গঠন করা হয়। এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদেীস বলেন, তদন্তে সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনপিবি/এস
Development by: visionbd24.com