২০২৩ সালের এশিয়ার ‘সেরা এবং অসাধারণ কর্ম প্রতিভাসম্পন্ন’ ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় দুই বাংলাদেশি স্থান করে নিয়েছেন। এরা হলেন- শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের ডা. সেঁজুতি সাহা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী।
সৃজনশীল চিন্তার গবেষণালব্ধ জ্ঞানের মাধ্যমে প্রান্তিক নারীদের জীবনমান উন্নয়নে টেকসই ভূমিকা রেখে চলেছেন ড. গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী এবং স্বাস্থ্য গবেষণায় বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ডা. সেঁজুতি সাহা। এই দুই নারী সিঙ্গাপুরভিত্তিক ম্যাগাজিন ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’র প্রকাশিত তালিকায় বিজ্ঞানী হিসেবে অষ্টম সংস্করণে রয়েছেন।
রবিবার (১১ জুন) ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’ ম্যাগাজিনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এশিয়ার গবেষকদের স্বপ্ন অনেক বড়। তারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা করেন। অজানার সীমানা ডিঙিয়ে পুরস্কারপ্রাপ্তরা তাদের নিজ দলের সহায়তা কর্মে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে।’
ড. গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যায় (জলভূমি পরিবেশবিদ্যা) পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সংরক্ষণ সংস্থা ওয়াইল্ডটিমের একজন বোর্ড সদস্য। সংস্থাটি বাংলাদেশের দ্রুত বিলীন হতে যাওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কাজ করে।
ড. গাওসিয়া বাংলাদেশে জলজ বাস্তুতন্ত্র এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্রজাতি সংরক্ষণে অবদান রাখার জন্য ২০২২ সালে ওডব্লিউএসডি-এলসভিয়ের ফাউন্ডেশন পুরস্কারপ্রাপ্ত হন। তিনি দেশের জলপথে প্লাস্টিক দূষণের ঝুঁকি মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে কাজ করেন। তিনি দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীদের জন্য কাজ করে চলেছেন। একই পেশায় টিকে থাকতে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে কীভাবে মাছ ধরার বাতিল জালকে কার্পেটের মতো পণ্যে পরিণত করা যায় সেই বিষয়ে নারীদের জ্ঞান দিয়েছেন।
দেশের একজন নেতৃস্থানীয় তরুণ বিজ্ঞানী ডা. সেঁজুতি সাহা। ইতিমধ্যে যিনি স্বাস্থ্য গবেষণায় বৈশ্বিক সমতার জন্য চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তিনি জীবন বিজ্ঞানে অবদান রাখার জন্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
ডা. সেঁজুতি বিশ্বের প্রথম বিজ্ঞানী যিনি গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন চিকুনগুনিয়া ভাইরাস রক্ত-মস্তিষ্কের বাধা অতিক্রম করতে পারে যার প্রভাবে বাংলাদেশে শিশুরা মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণায় অবদানের জন্য একাধিক দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি ২০২১ সালে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ কর্তৃক উইমেন অব ইন্সপাইরেসন ২০২১ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। ২০২০ সালে সংক্রামক রোগের শনাক্তকরণ গবেষণার জন্য ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড (চ্যান জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ) পান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন গ্লোবাল পোলিও ইরাডিকেশন ইনিশিয়েটিভের পোলিও ট্রানজিশন ইন্ডিপেনডেন্ট মনিটরিং বোর্ডে (টিআইএমবি) ডা. সাহা গবেষণাকর্মে অন্তর্ভুক্ত।
সেরাদের তালিকায় চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা রয়েছেন।
Development by: visionbd24.com