পরিবার পরিকল্পনা শিখতে বিদেশ ভ্রমণ!

বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২২ | ৫:১০ অপরাহ্ণ | 13 বার

পরিবার পরিকল্পনা শিখতে বিদেশ ভ্রমণ!

দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বিদেশ ভ্রমণে যেতে তোড়জোড় থেমে নেই সরকারি কর্মকর্তাদের। স্থানীয় সরকার বিভাগের শহর এলাকায় স্বল্প আয়ের মানুষ ও বস্তিবাসী, বিশেষ করে শিশু, নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ব্যবস্থার উন্নয়নে একটি প্রকল্পে বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে চাওয়া হয়েছে ৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সংকটের এই সময়ে বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য এত অর্থ ব্যয়কে অযৌক্তিক মনে করছে পরিকল্পনা কমিশন।

প্রকল্পটির সংশোধিত প্রস্তাবনা থেকে জানা যায়, ১০ সিটি করপোরেশন ও ১৭টি পৌরসভার ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ‘আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারি’ প্রকল্পে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

প্রকল্পটির মূল ডিপিপিতে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে রাখা হয়েছিল ১০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। পরে সংশোধিত ডিপিপিতে এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এরই মধ্যে বৈদেশিক প্রশিক্ষণে প্রকল্পটিতে ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ও করা হয়েছে। বাকি টাকা আগামী দুই বছরের মধ্যে ব্যয় করতে চান কর্মকর্তারা। অথচ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা বৈশ্বিক সংকটের কথা বিবেচনা করে কৃচ্ছ্রসাধনের কথা বলেছেন। খুব প্রয়োজন না হলে কোনো ব্যয় করতে নিষেধ করেছেন। তা আমলে নিয়ে অর্থমন্ত্রণালয় ১০ নভেম্বর এক পরিপত্রে উন্নয়ন বাজেট ও পরিচালন বাজেট উভয় ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিদেশ সফর বন্ধ করেছে।

প্রকল্পটির উপস্থাপনা থেকে জানা যায়, মূল ডিপিপিতে ছয়তলা বিশিষ্ট ৮টি নগর মাতৃসদন ও তিনতলা বিশিষ্ট ২০টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংস্থান ছিল। কিন্তু সংশোধিত ডিপিপিতে নগর মাতৃসদনের সংখ্যা ঠিক রাখলেও নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংখ্যা কমিয়ে ১৭টি করা হয়েছে। সময় বৃদ্ধি করা হচ্ছে এক বছর তিন মাস। মূল প্রকল্পে বাস্তবায়নকাল ছিল ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে কাজের অগ্রগতি হয়েছে খুবই কম। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ ও বাস্তব অগ্রগতি ৪০ শতাংশ। তাই বাকি কাজ শেষ করতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া প্রকল্পটিতে পরামর্শক খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা। মেডিক্যাল ও সার্জিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট বাবদ ১৭ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের লোকবল বাবদ থোক বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এভাবে কয়েকটি খাতে ব্যয় বেড়েছে। সব মিলিয়ে এক হাজার ১৩৫ কোটি থেকে ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে এক হাজার ২১৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবির ঋণ ৯৫২ কোটি টাকা, বাকি অর্থ সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস ডেলিভারি (২য় পর্যায়) প্রকল্পটি এপ্রিল ২০১৮ হতে মার্চ ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য ১১৩৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের পরিবর্তনে স্থানীয় মুদ্রায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, জিওবি অর্থের ভ্যাট/ট্যাক্স হার বৃদ্ধি ও পার্টনারশিপ এলাকার পরিবর্তনের কারণে ইউপিএইচসিএসডিপি (২য় পর্যায়) প্রকল্পটির ১ম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশোধন প্রস্তাবে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ১২১৮.৯৪ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়ন মেয়াদকাল এপ্রিল ২০১৮ হতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত। এক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৮২.৯৪ কোটি (৭.৩০%) টাকা এবং মেয়াদ বৃদ্ধি পেয়েছে ১ বছর ৩ মাস।

 

 

Development by: visionbd24.com