সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সম্মিলিত ব্যর্থতার কারণেই চকবাজার ট্র্যাজেডি বলে জানিয়েছে নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-বিআইপি। পুরান ঢাকার নিমতলী দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করলে এ ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি এড়ানো যেত বলে দাবি তাদের।
রোববার সকালে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে, এ ধরনের ট্র্যাজেডি যাতে আর না ঘটে সে জন্য ১৫ দফা সুপারিশ করেন সংগঠনটির নেতারা। বিগত ১৯৯৫ সালে প্রণীত মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখেই পুরান ঢাকাকে নিরাপদ করার সুপারিশ করেন তারা।
গত ২০১০ সালে নিমতলী ট্র্যাজেডিতে ১২৪ জন নিহত হওয়ার পর ভবিষ্যতে এ ধরনের ট্র্যাজেডি রোধে ১৭ দফা সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটি। তার মধ্যে জরুরিভিত্তিতে আবাসিক এলাকা থেকে গুদাম বা কারখানা সরিয়ে ফেলা, অনুমোদনহীন কারখানার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা, রাসায়নিক দ্রব্যের মুজদ ও বাজারজাতকরণে লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে তদারকি জোরদার করার বিষয়টি ছিল অন্যতম। আর এসব বাস্তবানয়নের কথা ছিল শিল্প মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের।
কিন্তু সেই সুপারিশগুলো ফাইলবন্দী হয়েই আছে- বাস্তবে কোনোটিই প্রয়োগ করা হয়নি। বিআইপির সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, এই সুপারিশগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যেত তবে চকবাজার ট্রাজেডি হয়তো ঘটতো না। তারা বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে অক্ষুণ্ণ রেখেই এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব এজন্য ১৯৯৫ সালের মহাপরিকল্পনা ধরে কাজ করার সুপারিশ তাদের।
বিশেষ করে আলাদা শিল্পনগরী করে, রাসায়নিক কারখানাগুলো সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ তাদের। আর গাফিলতি না করে, নিমতলী দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে এবার সরকারকে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণেও তারা তাগিদও দিয়েছেন।
এদিকে, পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মামলার এজাহারের পর ওয়াহেদ ম্যানশনের মালিকসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬৭ জন। শনাক্তের পর এ পর্যন্ত স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ৪৭ জনের মরদেহ।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের ওয়াহিদ মঞ্জিলে অগ্নিকাণ্ডে ৬৭ জন প্রাণ হারান। অর্ধশতাধিক আহতের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
Development by: visionbd24.com