ভোটের রাতে ধর্ষণের আসামি রুহুলের জামিনের আদেশ প্রত্যাহার

শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯ | ১:০৮ অপরাহ্ণ | 210 বার

ভোটের রাতে ধর্ষণের আসামি রুহুলের জামিনের আদেশ প্রত্যাহার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একগৃহবধূকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি রুহুল আমিনকে দেয়া হাইকের্টের একবছরের জামিনাদেশ বাতিল করেছে হাইকোর্ট। শনিবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। তাদের চেম্বার কক্ষে জামিনের আদেশটি রিকল করে আগের জামিন আদেশ বাতিল করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে ছুটির দিনে-শনিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারকরা চেম্বারে বসে আগের আদেশ প্রত্যাহারের (রিকল) সিদ্ধান্তের কথা জানায়। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন ও সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনও করা হবে। গত ১৮ মার্চ হাইকোর্ট রহুল আমিনকে একবছরের জামিন দেয় হাইকোর্ট—এ আদেশের বিরুদ্ধে ওইদিন আপিল করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। একইসঙ্গে আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয়ার সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বিভ্রান্তকর তথ্য দেয়ারও অভিযোগ উঠে।

হাইকোর্টের জামিন আদেশের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় বলেন, আসামির জামিন আবেদনটি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে শুনানির জন্য ফাইল করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে রুহুল আমিনের জামিন করানো হয়। রাষ্ট্রপক্ষকে বিভ্রান্ত করার ফলে ওইদিন আসামির জামিন হয়, সেদিন আমরা বুঝতেই পারিনি কোন জামিন হয়েছে।

তিনি বলেন, আসামির জামিন আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেছিলেন আইনজীবী মো. আশেক-ই-রসুল। শুনানিকালে ওই আইনজীবী আদালতকে জানায়, মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) আসামি রুহুল আমিনের নাম নেই। তাছাড়া, মামলাটি এখনও তদন্তাধীন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, বৃহস্পতিবারই আদেশটির বিষয়ে আদালতকে অবহিত করা হয়। পরে আদালত জরুরি ভিত্তিতে শনিবার নিজ চেম্বারে আদেশটি রিকল করে এবং আগের জামিন আদেশটি বাতিল করে। আগামী সপ্তাহে আমাদের (রাষ্ট্রপক্ষের) আবেদনটি সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য তোলা হবে। প্রসঙ্গত, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন রাতে সুবর্ণচরের মধ্যবাগ্যা গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ভোটের পর রাতে এ ঘটনায় আলোচনার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে।

ওই গৃহবধূর স্বামীর করা মামলার এজাহারে মোট নয় জনকে আসামি করা হয়। রুহুল আমিনকে আসামি করতে না পারায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুকের কাছে হতাশা প্রকাশ করেন ওই নারী। পরে রুহুল আমিনকেও আসামি করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় এ পর্যন্ত সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনসহ ১০ আসামিকে করে গ্রেপ্তার করা হয়। এরইমধ্যে আসামিদের কয়েকজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে।

Development by: visionbd24.com