শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা : ধর্ষকের বিরুদ্ধে নিজের মেয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য

সোমবার, ২১ জানুয়ারি ২০১৯ | ১০:০১ পূর্বাহ্ণ | 554 বার

শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা : ধর্ষকের বিরুদ্ধে নিজের মেয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য

গেণ্ডারিয়ায় দুই বছরের শিশু আয়েশা মনিকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এমনটিই ধারণা করছে পুলিশ। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত নাহিদকে গ্রেফতার করা হলেও অসুস্থ থাকার বাহানায় ঘটনার কথা স্বীকার করছে না আসামি। তবে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আসামি নাহিদের নিজের মেয়ে পুলিশের কাছে জবানবন্দী দিয়ে ঘটনার বর্ণনা করেছেন। এখন ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ধর্ষণ বা হত্যার আলামত পাওয়া গেলে আরো নিশ্চিত হতে পারবে পুলিশ। এরপরই আসামির কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। গ্রেফতারকৃত নাহিদ বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে। এ দিকে শিশু আয়েশা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত নাহিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি মানববন্ধন করেছে তার পরিবার ও এলাকাবাসী। গতকাল রোববার সিএমএম আদালতের সামনে নাহিদের ফাঁসি চেয়ে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করেন তারা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গেণ্ডারিয়া থানার এসআই হারুন বলেন, কয়েকজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায় অভিযুক্ত নাহিদের নিজের ১৪ বছর বয়সী মেয়ে বুশরার কাছ থেকে। তিনি বলেন, বুশরার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই দিন বিকেলে তার বাবা নাহিদ নিচে থেকে শিশু মেয়ে আয়েশাকে কোলে করে তাদের তিন তলার বাসায় নিয়ে আসেন। এরপর তাকে নিয়ে বাবার রুমে চলে যান। কিছু সময় পর মেয়েটি মা যাবো মা যাবো বলে কান্নাকাটি শুরু করে। আয়েশার কান্না শুনে বুশরা তার বাবার রুমে ছুটে যায়। সে সময় বাবা নাহিদ তাকে ধমক দিয়ে পাঠিয়ে দেন। এরপর আরো কয়েকবার শিশুটির কান্না শুনেছে বুশরা। কিন্তু বাবার ভয়ে আর ওই রুমের দিকে যায়নি। একপর্যায়ে আর কোনো কান্না শুনতে পাওয়নি বুশরা। কিছু সময় পর বাবা আয়েশাকে কোলে করে রুম থেকে বের হন। এরপর বারান্দার দিকে চলে যান। তারপরই কিছু একটা নিচে পড়ে যাওয়ার শব্দ পায় বুশরা। আর ওই সময়ই প্রতিবেশীরা চিৎকার দিয়ে বলে ‘কার বাচ্চা নিচে পড়ে গেছে’।

নিহত শিশু আয়েশার মামা মামুন বলেন, গেণ্ডারিয়া দ্বীননাথ সেন রোডের সাধনা ঔষধালয় গলির ৮২/সি/২ নম্বর বাড়ির পাশে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন আয়েশার বাবা ওয়ার্কশপ শ্রমিক ইদ্রিস আলী। তার চার সন্তানের মধ্যে আয়েশা তৃতীয়। গত ৫ তারিখ শনিবার বিকেল থেকে আয়েশাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সন্ধ্যার দিকে আশপাশের লোকজন নাহিদের তিনতলা বাড়ির পাশে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারা দেখেন আয়েশা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তাদের চিৎকারে আয়েশার মা সেখানে ছুটে যান। একপর্যায়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাকে স্থানীয় একটি হসপিটালে নিয়ে যান। কিন্তু ওই হসপিটাল থেকে আয়েশাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে নেয়ার পর চিকিৎসকরা দুই বছরের শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, বুশরার দেয়া স্বীকারোক্তি এবং আশপাশের বিভিন্ন আলামত দেখে পুলিশ অনেকটাই নিশ্চিত যে শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। তবে আসামি অসুস্থ থাকায় এখনো ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেয়নি। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এই সপ্তাহের মধ্যে আয়েশার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যাবে। ওই রিপোর্ট পাওয়া গেলে তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Development by: visionbd24.com