ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটের দিন রোকেয়া হলে হামলায় নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভনের সঙ্গে ছবি তুলতে রাজি হননি বলে মন্তব্য করেছেন স্বতন্ত্র জোটের ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান। তারা দু’জনই ভিপি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে এমন মিষ্টি কথা শুনা যায়। আমি এগুলো বিশ্বাস করি না।’
মঙ্গলবার অরণি সেমন্তি খানের সাথে কুশল বিনিময়ের জন্য হাত বাড়ান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন। বাড়ানো হাত সৌজন্যবশত না ফেরালেও তার সঙ্গে একত্রে ছবি তুলতে রাজি হননি অরণি। শোভনের সঙ্গীরাই ছবি তোলার আবদার করেছিল। তবে সে আবদার না মিটিয়ে অরণি বলেন, ‘সন্ত্রাসীর সঙ্গে ছবি তুলি না।’ বিব্রত শোভন সঙ্গে সঙ্গেই মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। অরণি ও শোভনের আলাপচারিতার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ডাকসু নির্বাচনের পরদিন মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল ৪ টার দিকে ভিপি পদে নির্বাচিত নুরুল হক নুরুর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে টিএসসির অডিটোরিয়ামের মঞ্চ থেকে নেমে আসেন শোভন। কিছুদূর এগিয়ে গেলেও ঘুরে আবার মঞ্চে ওঠেন তিনি। মঞ্চের শেষ প্রান্তে বসা অরণির সামনে দাঁড়িয়ে শোভন সৌজন্য দেখিয়ে তার কুশল জিজ্ঞেস করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, শোভনকে আসতে দেখেও নিজের ফোনে মগ্ন ছিলেন অরণি। এসময় শোভন হাত বাড়িয়ে দিলে স্মিত হেসে সৌজন্যতা রক্ষা করে হাত মেলান অরণি। এরপর সেখানে ছাত্রলীগের এক কর্মী শোভন, অরণিসহ অন্যদের ছবি তুলতে চান। তখন অরণি বলে ওঠেন, ‘না ভাই, কালকে (১১ মার্চ) রোকেয়া হলে এই লোক নিজে বলছে মার, ধর, (মোবাইল ফোন দেখিয়ে বলেন) আমার কাছে এভিডেন্স আছে। এই লোকের সঙ্গে ছবি তুলবো না। আমার রুচি এত খারাপ হয় নাই।’
বিব্রত শোভন সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গীদের নিয়ে সেখান থেকে চলে যান। পেছন থেকে অরণি তখনও বলতে থাকেন ‘সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ছবি তুলি না।’ শোভন চলে গেলে অরণির সঙ্গীরা করতালি দিয়ে তার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
শোভনের ছবি না তুলার বিষয়ে অরণি বলেন, ‘আমরা যে প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছিলাম তাদের আলোচনা হচ্ছিল। তার মাঝে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শোভন আসেন। শোভন নুরুর সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে চান। তারপরে তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। বলেন, হ্যাঁ তোমাকে ভালো লাগে, কথা বলি, ছবি তুলবো। তখন আমি তাকে বলে দিলাম যে, গতকাল রোকেয়া হলে যে হামলা হয়েছিল তার নেতৃত্বই আপনি দিয়েছেন। আমার কাছে ভিডিও আছে। আপনি বলেছেন, ওরে মার, ওরে ধর। এরপরে তো তার সঙ্গে কথা বলা কী, ছবি তোলার প্রশ্নই উঠে না। আমি তাকে বলেছি, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ছবি তুলবো না।’
সৌজন্যতা দেখিয়ে যেহেতু সে নিজে থেকে দেখা করতে এসেছে তারপরেও কেন আপনি এমনটা করলেন? প্রশ্নের জবাবে অরণি বলেন, যেহেতু গতকাল উনি বলেছেন, ওরে মার, ওরে ধর। তারপরে এমন সৌহার্দ কতটুকু গ্রহণযোগ্য তা আমার আদর্শে ধরে না।
ছাত্রলীগ সভাপতির আজকের অবস্থানের বিষয়ে অরণি বলেন, নির্বাচনের আগে পরে আমরা ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে অনেক মিষ্টি কথা শুনতে পাই। এটা তারই অংশ। আমার আদর্শের জায়গা থেকে আমি অন্তত ওগুলো বিশ্বাস করতে চাই না।
Development by: visionbd24.com